গোলাম আযম, একজন ইমিডিয়েট আয়নাঘর ফেরত মানুষ এবং আমাদের জাতীয় সঙ্গীত।

গোলাম আযম, একজন ইমিডিয়েট  আয়নাঘর ফেরত মানুষ এবং আমাদের জাতীয় সঙ্গীত।

কল্পনা করুন, আজ থেকে ৫০ বছর পর - বাংলাদেশে সব রকম পানির বোতলে মুগ্ধের ছবি না থাকলে সেই বোতল অনুমোদন পায়না - এই রকম সিচুয়েশনে ভবিষ্যৎ জেনারেশনের আজকের মুগ্ধের প্রতি কোন রকম মুগ্ধতা অবশিষ্ট থাকবে?

মোড়ে মোড়ে আবু সাঈদ কিংবা বর্তমান সমন্বয়কদের ভাষ্কর্য থাকলে, এবং উঠতে বসতে সেইখানে ফুল এবং সালাম দেয়া বাধ্যতামূলক করলে - তখনকার জেনারেশনের পুরো আন্দোলন নিয়েই একটা নেগেটিভ ধারণা ক্রিয়েট হতে পারে - কিন্তু সেইটা কি আমাদের বর্তমান আন্দোলন কে মিথ্যা করে দেয়?

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আওয়ামীলীগের বাড়াবাড়ি কি মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান মিথ্যে করে দেয়?

আওয়ামীলীগ যেমন সব আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাসী বলেছিল, ঠিক একই ভাবে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযম মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ত্রাসী বলেছিল।

পুরোটা যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশের মানুষের উপর এই লোক অত্যাচার করে আসছে। এমনকি বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীও সে ছিল।

দেশ প্রথমবার স্বাধীন হওয়ার পরও এই লোক লন্ডনে গিয়ে পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি গঠন করেন। ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত এই লোক ডিরেক্ট বিরোধিতা করে গেছেন, লবিং করেছেন যাতে অন্য দেশরা বাংলাদেশকে স্বিকৃতি না দেয়।

তো আমান আযমীকে যদি আপনারা গোলাম আযমের পুত্র হিসেবে হাইলাইট করেন, উপরের লিখাগুলা গোলাম আযমের কনটেক্সট। আর যদি আয়নাঘর সারভাইবর হিসেবে হাইলাইট করেন - তাহলে বুড়ো লোকটাকে একটু ক্ষান্ত দেন।

বাবার দোষে ছেলেকে অপরাধী বানানো আমি সাপোর্ট করিনা। ১ ঘণ্টার ইন্টারভিউতে উনি আরও অনেক কথা বলসেন, খুব ছোট ছোট ফ্যাসিলিটিস চেয়ে বসেছেন - যেটা আমি শিওর নরমাল অবস্থায় থাকলে উনি মিডিয়াতে বলতেন না।

জাতীয় সংগীত পরিবর্তন চেয়েছেন - সেটাকেও আমি সিরিয়াসলি নেইনা। সন্তান বাবার ফিলোসফি ধারণ করতেই পারে।

কিন্তু সন্তানী জোশে হটাত যে এত মানুষ জাতীয় সংগীত ইঞ্চি ইঞ্চি মাটি চাচ্ছেন, সেইটার বিরধিতা করছি।

৫০ বছর পরে এসে জাতীয় সংগীতের পরিবর্তন চাওয়া আমার কাছে গোলাম আজমের গোলামীই মনে হয়।

অনেকে অনেক ইতিহাসের রেফারেন্স দিয়ে যুক্তি দিচ্ছেন - জাতীয় সংগীতের জন্ম কিভাবে হয়েছে, কোন কনটেক্সটে হয়েছে ইত্যাদি। সব কনটেক্সট আসলে ধুয়ে মুছে গেছে একাত্তরে যখন মুক্তিযোদ্ধারা এই গানকে একসেপ্ট করে জীবন দিয়েছে তখন।

জাতীয় সংগীতের জন্মের ইতিহাস থেকে গুরুত্বপূর্ন হলো জাতীয় সংগীতের সাথে আমাদের সম্পর্ক।

সেই সম্পর্ক ছিন্ন করার কোন যৌক্তিক কারণ আমি দেখিনা।