Enthusiast’s Trap এবং দেশের পলিটিক্স

Enthusiast’s Trap এবং দেশের পলিটিক্স
Photo by Nick Fewings / Unsplash

Enthusiast’s Trap বলে টেক ওয়ার্ল্ডে একটা টার্ম আছে, ওয়ানপ্লাস ফোনের এক্সাম্পল দিয়ে একটু ব্যাখ্যা করি।

ওয়ানপ্লাস যখন প্রথমে বাজারে আসলো, Tech Enthusiast রা খুবই খুশী হলো। একদম ফ্ল্যাগশীপ ফোনের সবগুলো ফিচার, কিন্তু মিডরেঞ্জ বাজেট ফোনের মত দাম।

যারা ফোনের স্পেসিফিকেশন, ফিচার, ক্যামেরার লো লাইট পার্ফমেন্স, বেঞ্চমার্ক টেস্ট নিয়ে ইত্যাদি নিয়ে মাথা ঘামায়, তাদের যখন সবগুলো প্যারামিটারে খুশী করা হলো কম দামের মধ্যে তখন রাতারাতি ওয়ানপ্লাস সবার কাছে ফেমাস হয়ে গেল।

তারা তখন সোশ্যাল মিডিয়াতে এইগুলো প্রোমোট করা শুরু করল। ধীরে ধীরে ওয়ান প্লাস জনপ্রিয় হলো।

কিন্তু সমস্যা হলো, এই ধরণের Tech Enthusiast সংখ্যায় কম। এবং এদের খুশী রাখা বেশ কষ্ট। এরা সব ধরনের প্রো ফিচারস চায় আবার দামও কম চায়, এই দিকে এদের ফলোয়ার বেইজও খুব বেশী না। তাই যে কোন কোম্পানি যদি শুধু তাদের হ্যাপি করতে চায়, তারা একটা ট্র্যাপে পরে যায় - তাদের ব্যবসা স্কেইল করা কঠিন হয়ে যায়।

ওয়ান প্লাস তাই আস্তে আস্তে সেলিব্রিটি এনডোর্স করা শুরু করল। এভারেজ মানুষ হলিউডের নায়িকাকে বেশী চেনে, এভারেজ মানুষ বেঞ্চমার্ক টেস্ট নিয়ে মাথা ঘামায় না। ফ্ল্যাগশীপ কিলার থেকে আস্তে আস্তে নিজেরাই ফ্ল্যাগশীপ হয়ে গেল। এখন আর তারা কম দামে বেস্ট ফিচারওয়ালা ফোন বানায় না।

Enthusiast দের সার্ভ করে আসলে কোন টেক প্রডাক্টই বেশিদিন বাজারে সুবিধা করতে পারেনা।

এই কথা গুলো বললাম, আমি এবং আমার বন্ধু সার্কেল পলিটিক্যাল আস্পেক্টে এই রকম একটা যায়গায় বিলং করি। আমরা ৭১ কে কেউ ডাউনপ্লে করলে সেটা পছন্দ করিনা, ২৪কে সাজানো নাটক বললেও পছন্দ করিনা। আমরা ধর্মীয় গোঁড়ামি সহ্য করিনা, একই ভাবে ধর্মীয় সিম্বল দেখে কাউকে জাজ কিংবা হেনস্তা করাও পছন্দ করিনা।

We believe in live and let live. Peacefully.

কোন পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকার কারণে আমাদের কোন পার্টি যা ইচ্ছা তা ই খাওয়াতে পারেনা। আমরা প্রশ্ন করি।

এনার্জি থাকলে কথা বলি, এনার্জি না থাকলে ইগ্নোর করি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে ধ্যাতেরি বলে আমাদের সার্কেলটা দেশের বাইরে চলে যায় অথবা দেশে এমন চাকরি/ব্যবসা করে যেখানে পলিটিক্যাল পার্টির ইনফ্লুয়েন্স কম।

সিস্টেমে ঢুকে বাকিদের সিস্টেম হয়ে যেতে দেখে নিজেরা আর সিস্টেমে ঢুকিনা। আমরা কখনো হুট হাট কারো কথায় রাস্তায় নামিনা। নামার আগে অনেক ভাবি।তাই আমাদের কথা বলে, এই রকম রাজনৈতিক দল এই দেশে একটাও নাই।

৫ই আগস্ট হওয়ার পর, আমি ভেবেছিলাম ছাত্রদের যেই দলটা - ওরা আমাদের কথা বলবে। Enthusiast’s Trap নিয়ে জানাশোনার পরেও কিভাবে এইটা ভাবলাম তা ভেবে লজ্জা পাই।

সার্জিস হাসনাত আমাদের কথা বলে এই দেশে ভাত পাবেনা। কারণ আমাদের ডিমান্ড বেশি, আবার আমরা দাম কম দিব। রাজুতে চল বললেই আমরা যাব না, অনেক বার ভাবব। লাঠি নিয়ে রাস্তায় নামব শুধুমাত্র যখন এইটা এবসলুট নেসিসিটি।

আমাদের ক্যারিয়ার আছে, ফ্যামিলি আছে - পলিটিক্স থেকে আমরা দুই পয়সার ফায়দা নেই না। তাই আমাদের প্রায়োরিটি ভিন্ন।

আমাদের কথা বলা তাই ভীষণ লস প্রোজেক্ট। তাই সার্জিসদের শিবির ঘেঁষা পলিটিক্স দেখে খুব বেশি অবাক হই না।

Live and let live ফিলসফিতে দেশের বেশীর ভাগ মানুষ বিশ্বাস করেনা - এইটাই হচ্ছে রিয়েলিটি। “I want to live life on my own terms, and you must adapt to fit into it.” এইটাই এই দেশের বেশীরভাগ মানুষের চাওয়া।

যেমন জনগণ, তেমন শাসক - ২০২৫ সালে তাই আমার কারো থেকে কোন এক্সপেকটেশন নাই।